Ganashakti
পঞ্চায়েত নির্বাচন : উদ্বাস্তু ও গ্রামীণ জনগণ
কান্তি বিশ্বাস
পশ্চিমবঙ্গে এখন বিরাজ করছে এক অস্বাভাবিক অবস্থা। শাসকদলের ভৈরববাহিনীর আক্রমণে জনজীবন একেবারে বিধ্বস্ত। প্রথম দফার পঞ্চায়েত ভোটে আমরা বিক্ষিপ্ত হিংসার চেহারা দেখতে পেলাম। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রচণ্ডভাবে আক্রান্ত। শিক্ষাসহ সমস্ত উন্নয়নমূলক কর্মসূচী ভীষণভাবে বাধাপ্রাপ্ত। অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি সম্পূর্ণভাবে স্তব্ধ। নারীর মর্যাদা সীমাহীনভাবে কলঙ্কিত। এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে পশ্চিমবাংলায় এখন পঞ্চায়েত নির্বাচন হচ্ছে।
১৯৫৭ সালে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম তৈরি হয় কিছুটা পঞ্চায়েতী ব্যবস্থা। তারপর কয়েকবার আইন সংশোধন হয়েছে এই রাজ্যে। সর্বশেষ ১৯৭৩ সালে নতুন পঞ্চায়েতী আইন পশ্চিমবাংলায় বিধিবদ্ধ হয়। যদিও ১৯৭৩ সালে পশ্চিমবঙ্গে নতুন পঞ্চায়েতী আইন বিধিবদ্ধ হলো কিন্তু তাকে কার্যকর করা হলো না। ১৯৭৮ সালে ৪ঠা জুন বামফ্রন্ট সরকার প্রথম এই পঞ্চায়েত নির্বাচনের ব্যবস্থা করে। তার পূর্বে শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছিল ১৯৬৮ সালে। ১৯৭৮ সালে ৪ঠা জুন যখন বামফ্রন্ট সরকার প্রথম এই পঞ্চায়েত নির্বাচনের ব্যবস্থা করে তখন ১৫টি জেলায় ত্রিস্তরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ব্যবস্থা হয়। এই ত্রিস্তরে মোট আসনের সংখ্যা ছিল ৫৫,৬৫০টি। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে পশ্চিমবঙ্গে জনসংখ্যার ৬৮.৪ শতাংশ মানুষ বর্তমানে গ্রামে বসবাস করেন। এই গ্রামীণ জনগণের কল্যাণের জন্য পঞ্চায়েতী ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য বামফ্রন্ট সরকার বিশেষ উদ্যোগীর ভূমিকা গ্রহণ করে। পশ্চিমবঙ্গে ভূমিসংস্কার অর্থাৎ জোতদার জমিদারদের কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করে ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে জমি বিলি বণ্টনের ব্যবস্থা করা হয়। বর্গাদারদের নাম নথিভুক্ত করার জন্য এই পঞ্চায়েত ব্যবস্থা বিশেষভাবে সাহায্য করেছে। তার ফলে ভারতবর্ষে মোট আবাদী জমির মাত্র ৩ শতাংশ পশ্চিমবঙ্গে। কিন্তু ভূমিসংস্কারের ফলে জোতদার ও জমিদারদের কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করে ভূমিহীন ও অল্প জমির মালিকদের মধ্যে জমি বিলিবণ্টন হয় এবং তার দ্বারা গোটা ভারতবর্ষে যত মানুষ এই জমি পেয়েছে তার ৫৭ শতাংশ মানুষ পেয়েছে একমাত্র এই পশ্চিমবঙ্গেই। শুধু গ্রামীণ জনগণের ভাগ্যে জমির ব্যবস্থা হয়েছে তাই নয়, গ্রামের রাস্তাঘাট, সেচ ব্যবস্থা, বৈদ্যুতিকীকরণ ক্ষুদ্র শিল্পের প্রভূত উন্নতি ঘটেছে এই গ্রামগুলিতে।
এই পঞ্চায়েতী ব্যবস্থার সাহায্যে গ্রামের উন্নয়নের প্রভাব পড়েছে শহরেও। কেননা গ্রামে যে বিশাল সংখ্যক মানুষ বসবাস করে তাদের অবস্থার যদি উন্নতি হয়, তাদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় তবে অভ্যন্তরীণ বাজার তেজী হয়, শিল্প, কলকারখানা গড়ে ওঠবার পরিমণ্ডল তৈরি হয়। ক্ষুদ্র শিল্প, মাঝারি শিল্প, বৃহৎ শিল্প তার দ্বারা বেশি পরিমাণে স্থাপিত হয়। শিল্প-উৎপাদনের হার এই সময়ে এই রাজ্যে বেড়েছে দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি। এরই ফলে পশ্চিমবঙ্গে এই পঞ্চায়েতী ব্যবস্থা, ভূমিসংস্কারসহ যে আর্থিক উন্নয়ন ঘটেছে তার ফলে গ্রাম এবং শহর জীবনে প্রভূত পরিমাণে উন্নতি সাধিত হয়েছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের পক্ষ থেকে প্রতি বছর যে মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় তার ২০০৫ সালে মানব উন্নয়ন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে সারা বিশ্বের এত অগ্রগতি সত্ত্বেও বহু মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। মানবিক অধিকার থেকেও এখনো বঞ্চিত রয়েই গেছে। কিন্তু সরকারের যদি যথার্থ পরিকল্পনা থাকে, সদিচ্ছা থাকে তাহলে এই দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের ব্যথা বেদনা দূরীভূত হতে পারে, যদি তা দেখতে চাই তাহলে ভারতবর্ষ নাম করে একটি দেশ আছে, সেই দেশের পূর্বাঞ্চলে ছোট্ট একটি রাজ্য আছে সেখানে যেতে হবে, সেই রাজ্যটির নাম পশ্চিমবঙ্গ। সেখানে একটা রাজ্য সরকার তারা ভূমিসংস্কার, পঞ্চায়েতী ব্যবস্থা প্রভৃতির সাহায্যে মানুষের যে কল্যাণসাধন করেছে তা বিশ্বের মানুষের কাছে একটা নজির তৈরি হয়ে আছে। এই কথা রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রতিবেদনে উল্লিখিত হয়েছে। বিশ্বের জনসংখ্যার মাত্র ১.২ শতাংশ বসবাস করে পশ্চিমবঙ্গে, আর এই পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েতের সাফল্য, ভূমিসংস্কারের সাফল্য, তথা বামফ্রন্ট সরকারের সাফল্য গোটা বিশ্ববাসীর কাছে উপস্থাপিত হলো রাষ্ট্রসঙ্ঘের ব্যবস্থাপনায়। ১৯৮৯ সালে প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী ১৩ই অক্টোবর রাজ্যসভায় মন্তব্য করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা থেকে দেশবাসীকে শিক্ষা নিতে হবে। ১৯৯০ সালে কলকাতায় পূর্বাঞ্চলের পঞ্চায়েত সম্মেলনে তিনি ঐ প্রসঙ্গে একই অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন।
এই পঞ্চায়েতের সাফল্য তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব সরকারের এবং যারা পঞ্চায়েতে নির্বাচিত হবেন তাদের পক্ষ থেকে এই ভূমিকা তারা পালন করবে।পশ্চিমবঙ্গে ’৭৮ সালে যে নতুন আইনে পঞ্চায়েত নির্বাচন হলো তারপরে পর পর আরও ৬বার পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়। ঐ সাতটা পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামফ্রন্ট ৬০শতাংশের বেশি সমর্থন পেয়ে পঞ্চায়েত গড়েছে। বর্তমানে যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে যাচ্ছে তা হলো অষ্টম পঞ্চায়েত নির্বাচন। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে সাতবার পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে। সর্বশেষ যে নির্বাচন হয় বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ২০০৮ সালে, সেখানে ত্রিস্তরে পঞ্চায়েত নির্বাচনে যারা জয়ী হয়েছিলেন তার মধ্যে ৪৯.১৮ শতাংশ ছিলেন মহিলা, তফসিলী জাতি ছিল ৩৫.৭৬ শতাংশ, আদিবাসী প্রতিনিধিত্ব ছিল ৮.৪৭ শতাংশ, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর প্রতিনিধি ছিল ৫.৭০ শতাংশ, মুসলিম প্রতিনিধিত্ব ছিল ২৩.১৭ শতাংশ।
এই প্রসঙ্গে আসা যাক উদ্বাস্তুদের কথা। পশ্চিমবঙ্গে জনসংখ্যার ৬ভাগের একভাগ ওপার বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তু। তাদের জীবনে বেদনার কোনো সীমা পরিসীমা নেই। দেশ যখন দ্বিখণ্ডিত হয়ে স্বাধীনতা পায় তখন কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু, গান্ধীজী এই আশ্বাস বাণী শুনিয়েছিলেন যে, দেশ বিভাগের ফলে ওপার থেকে অর্থাৎ পাকিস্তান থেকে যে সমস্ত উদ্বাস্তু ভারতে আসবেন তারা বুঝতেই পারবেন না যে তারা বিদেশে এসেছেন, তাদের যাবতীয় পুনর্বাসনের ব্যবস্থা ভারত সরকার করবে। এটাও সত্যি এই উদ্বাস্তুদের কোনো দায়িত্ব তখন কেন্দ্রীয় সরকার নেয়নি। সেইজন্য উদ্বাস্তুদের জীবনে যে ব্যথা বেদনা তা দূরীভূত করার জন্য বারে বারে বামপন্থী দলগুলির পক্ষ থেকে আন্দোলন তৈরি করা হয়েছে। গড়ে উঠেছে সম্মিলিত কেন্দ্রীয় বাস্তুহারা পরিষদ। তারা উদ্বাস্তু জীবনে দুঃখকষ্টকে দূর করার জন্য রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বারে বারে দাবি করে এসেছে এবং বিভিন্ন আন্দোলন সংঘটিত করেছে।
পশ্চিমবাংলায় বামফ্রন্ট সরকার আসবার পরেই ’৭৭ সালে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। যেখানে কলোনি আছে সেই কলোনিগুলির জমিতে উদ্বাস্তুদের স্থায়ী স্বত্ব দেওয়ার কাজটা শুরু করা হয় এবং বিভিন্নভাবে উদ্বাস্তুদের সাহায্য করার বিষয়ে বামফ্রন্ট সরকার উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ করে। যে সমস্ত উদ্বাস্তু কলোনিতে বসবাস করে সেখানে তাদের জীবনকে স্বাভাবিক করার জন্য বামফ্রন্ট সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করে, একইভাবে গোটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের উন্নয়নের ফলে শহরে, গ্রামে, কলোনির বাইরে যে সমস্ত উদ্বাস্তুরা বসবাস করে তাদের জীবনেও আসে নতুন জীবনের স্বস্তির এক বাতাবরণ।
পশ্চিমবাংলায় যখন ’৬৭ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকার ছিল তখন উদ্বাস্তু পুনর্বাসনের জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি করা হয়েছিল ২৫০কোটি টাকা। ’৭৭ সালে বামফ্রন্ট সরকার যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন কেন্দ্রের সরকারের কাছে উদ্বাস্তু পুনর্বাসনের জন্য দাবি করে ৫০০ কোটি টাকা, পরে সমর মুখার্জির নেতৃত্বে এক সদস্যযুক্ত একটি পুনর্বাসন কমিটি গঠন করা হয়। তাদের রিপোর্ট অনুসারে ১৯৮১ সালে কেন্দ্রের কাছে দাবি করা হয় ৭৫০ কোটি টাকা। ১৯৯৪ সালে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পশ্চিমবাংলায় উদ্বাস্তু পুনর্বাসনের জন্য দাবি করা হয় ১,৭২৬ কোটি টাকা।
সর্বশেষ ২০০৪ সালে ৭ই জুলাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্রের কাছে ৫হাজার ১০কোটি ৬০ লক্ষ টাকা দাবি পেশ করা হয়, যাতে উদ্বাস্তুদের সুষ্ঠু পুনর্বাসনের কাজ সম্পন্ন হতে পারে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এসব ব্যাপারে নীরব থেকে গেছে।
রেলসহ কেন্দ্রীয় সরকারের জমিতে এই রাজ্যে শহর ও গ্রামে আছে ১৭০০ উদ্বাস্তু কলোনি। অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও তার কোনো স্বীকৃতি এখনো কেন্দ্রীয় সরকার দেয়নি। কেন্দ্রীয় সরকার বাঙালী উদ্বাস্তুদের প্রতি দেখিয়ে যাচ্ছে মর্মান্তিক উপেক্ষা।
২০০৩ সালে কেন্দ্রে বি জে পি নেতৃত্বাধীন অটলবিহারী বাজপেয়ীর প্রধানমন্ত্রিত্বে গঠিত সরকার উদ্বাস্তুদের জীবনে হেনেছে এক চরম আঘাত। পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন ঐ মন্ত্রিসভার একজন সদস্য। নাগরিকত্ব আইন (২০০৩) এই সরকার বিধিবদ্ধ করে ঘোষণা করেছেন ১৯৭১ সালের পরে ভারতে আগত নাগরিকদের বৈধ প্রবেশপত্র দেখাতে হবে। তা না পারলে তারা এবং তাদের সন্তান-সন্ততি অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসাবে আইনের চোখে বিবেচিত হবে। ফলে রাষ্ট্রশক্তি তাদের ভারত থেকে বহিষ্কার করবে। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে ভারতে আসা নাগরিকদের এই আইনের বাইরে রাখা হয়েছে। এই বিভীষিকাময় আইনের ফলে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসকারী ২ কোটি বাঙালী উদ্বাস্তুদের জীবন নিক্ষিপ্ত হয়েছে সম্পূর্ণ অনিশ্চয়তার গর্ভে। ইতোমধ্যে এই তথাকথিত বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের ভারত থেকে পুলিসের সাহায্যে বহিষ্কার করা শুরু হয়েছে। এই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন সি পি আই (এম)-র সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত। লোকসভায় সি পি আই (এম) দলের নেতা বাসুদেব আচারিয়াসহ সমস্ত বামপন্থী সাংসদ এই অমানবিক, হিংস্র আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। তদানীন্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঐ আইনের পক্ষে জোরালো সমর্থন জানিয়েছিলেন। ২০০৪ সালে কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার হলে অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় ঐ আইনের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। সি পি আই (এম) পলিট ব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাত প্রধানমন্ত্রীর সাথে (গতবছর) সাক্ষাৎ করে এই আইন বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন।
বর্তমান সরকার গত বছর পঞ্চায়েত আইন সংশোধন করেছে। ১৯৯৩ সালে বামফ্রন্ট সরকার ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সর্বত্র তফসিলী জাতির জন্য ২২ শতাংশ আসন, আদিবাসীদের জন্য ৬ শতাংশ এবং মহিলাদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষিত করেছিল। বর্তমান সরকার পঞ্চায়েত আইন সংশোধন করে বলেছে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন স্তরে তফসিলী জাতি ও আদিবাসীগণ মোট জনসংখ্যার যত শতাংশ, তাদের জন্য তত শতাংশ পদই সংরক্ষিত হবে। কিন্তু কোনো ক্ষেত্রেই যথাক্রমে ২২ শতাংশ ও ৬ শতাংশ এর অধিক হতে পারবে না। এর ফলে সংরক্ষণের মূল যে অর্থ ‘ন্যূনতম’কে পরিবর্তন করে অনধিক করা হলো। বঞ্চিত হলো এই দুই পশ্চাৎপদ সম্প্রদায়ের মানুষ। ২০১১ সালের বামফ্রন্ট সরকার পঞ্চায়েত আইন সংশোধন করে মহিলাদের জন্য ৫০শতাংশ আসন সংরক্ষিত করেছিল। বর্তমান সরকার এখানেও মহিলাদের জন্য অনধিক ৫০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের ঘোষণা করেছে। এর ফলে মহিলারা হলেন বামফ্রন্ট সরকারের আমলে দেওয়া অধিকার থেকে কিছু পরিমাণে বঞ্চিত।
পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে আরেকটি সংস্থার নাম মনে পড়ে। সেটি হলো ‘‘ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশন’’, ২০০১ সালে এক রিপোর্ট প্রকাশ করে বলেছে গোটা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে দারিদ্র্যসীমা রেখার নিচে বসবাসকারী মানুষের হার হ্রাস পেয়েছে ভারতের মধ্যে সব থেকে বেশি।
আলোচনার মাত্রা আর বাড়াতে চাই না। বর্তমান সরকার এই বঙ্গের পঞ্চায়েতী ব্যবস্থাকে সর্ববিধ উপায়ে দখল করে মূলত পঞ্চায়েতে দলতন্ত্র কায়েম করেছে। বাংলার এই পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের মানব-হিতৈষী জনগণ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় শুরু থেকেই বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে সন্ত্রাস। গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়া হচ্ছে ব্যাহত। সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে লঙ্ঘন করে গ্রামবাংলার গণতন্ত্রপ্রেমী, শান্তিপ্রিয় এবং প্রগতিবাদী মানুষ এই অশুভ শক্তিকে নির্বাচনে পরাজিত করে বামফ্রন্ট প্রার্থীদের জয়ী করবেন সেই বিশ্বাস আমাদের আছে।
- See more at: http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=43633#sthash.h17vb0UC.dpuf
No comments:
Post a Comment